ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় স্ত্রী ফেলে শ্বাশুড়ি নিয়ে নিরুদ্দেশ ঘটনায় মামলার রায়

Chakaria Pic.03.07.17মেয়ের জামাইকে দুই বছর ও শ্বাশুড়িকে এক বছর কারাদন্ড আদালতের

বিশেষ প্রতিবেদক ঃ

কক্সবাজারের চকরিয়ায় স্ত্রীকে ফেলে শ্বাশুড়ির সঙ্গে অবৈধ মেলামেশা ও পরে তাকে নিয়ে নিরুদ্দেশ হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। রায়ে মেয়ের জামাইকে দুই বছর এবং শ্বাশুড়িকে এক বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার চাঞ্চল্যকর ও জঘন্যতম এই ঘটনার মামলার রায় ঘোষণার দিনক্ষণ ঠিক ছিল উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

দুই বছরের কারাদন্ডপ্রাপ্ত মেয়ের জামাইয়ের নাম গৌরাঙ্গ দাশ (৫০)। তিনি চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট স্টেশন এলাকার বাসিন্দা এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীর মৃত হরিশ চন্দ্র দাশের ছেলে। অপরদিকে একবছর কারাদন্ডপ্রাপ্ত শ্বাশুড়ির নাম সন্ধ্যা রাণী দাশ (৫৫)। তিনি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গুনাগরী গ্রামের মৃত সাধন চন্দ্র দাশের স্ত্রী এবং দুই বছর কারাদন্ডপ্রাপ্ত গৌরাঙ্গের আপন শ্বাশুড়ি। গতকাল রায় ঘোষণার আগে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন গৌরাঙ্গ। রায় ঘোষণা শেষে গৌরাঙ্গকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক। অবশ্য শ্বাশুড়ি সন্ধ্যা রাণী বর্তমানে পলাতক আছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গুনাগরী গ্রামের মৃত সাধন চন্দ্র দাশের কন্যা লাকী দাশকে বিয়ে করেন চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট স্টেশন এলাকার গৌরাঙ্গ দাশ। তাদের সংসারে এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। ২০০৫ সালের প্রথমদিকে গৌরাঙ্গ দাশ তার আপন শ্বাশুড়ি সন্ধ্যা রাণী দাশকে মালুমঘাটস্থ বাড়িতে এনে রাখেন। এর পর থেকে শ্বাশুড়ির সঙ্গে অবৈধ মেলামেশা শুরু করলে খোদ পরিবার সদস্যরা তা দেখে ফেলে। এনিয়ে পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি হলে শ্বাশুড়ি সন্ধ্যা রাণীকে নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে পড়েন মেয়ের জামাই গৌরাঙ্গ দাশ।

সূত্র আরো জানায়, এ ঘটনায় স্বামী গৌরাঙ্গ ও মা সন্ধ্যা রাণী দাশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন কন্যা লাকী দাশ। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তৎকালীন ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন তদন্তের জন্য। দীর্ঘ তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে ২০১১ সালে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তৎকালীন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী খোকন মিয়া।

উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আইনজীবী মো. লুৎফুল কবির বলেন, ‘চাঞ্চল্যকর ও জঘন্যতম এই ঘটনার মামলায় আদালতের বিচারক আজ (গতকাল) রায় ঘোষণা করেন। রায়ে গৌরাঙ্গ দাশকে ৪৯৪ ও ৪৯৭ ধারায় এক বছর করে দুই বছর এবং শ্বাশুড়ি সন্ধ্যা রাণী দাশকে ৪৯৪ ধারায় এক বছর কারাদন্ড প্রদান করেন।’

আইনজীবী লুৎফুল জানান, রায় ঘোষণার আগে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন গৌরাঙ্গ দাশ। তার উপস্থিতিতে বিচারক রায় ঘোষণা করেন এবং তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গৌরাঙ্গ দাশের একমাত্র পুত্র বলেন, ‘আমাদের বাবা যে জঘন্যতম ঘটনা সংঘটিত করেছেন তাতে সমাজের কাছে আমাদের মান-সম্মান বলতে কিছুই নেই। আদালতের এই রায়ের মাধ্যমে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরণের জঘন্যতম ঘটনার জন্ম দেওয়ার সাহস করবে না বলে আমি মনে করি।’

মামলার বাদী লাকী দাশ বলেন, ‘লম্পট স্বামী এবং দুশ্চরিত্রা মা’র বিরুদ্ধে দেওয়া আদালতের এই রায় থেকে সমাজ অনেক কিছুই শিখতে পারবে।’ ##

পাঠকের মতামত: